রোমীয়দের পত্রটি ব্যাখ্যা করে যে কীভাবে একজন ব্যক্তি পরিত্রাণ এবং আশীর্বাদ পাওয়ার জন্য ঈশ্বরের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে। ঈশ্বরের সাথে সম্পর্ক বিশ্বাস দ্বারা প্রাপ্ত অনুগ্রহের উপর ভিত্তিশীল। এই বার্তাটি ইস্রায়েলের লোকদের ব্যাপারে প্রশ্ন জাগিয়েছিল। ঈশ্বর এবং ইস্রায়েলের মধ্যে বিশেষ সম্পর্কের ক্ষেত্রে ঘটেছিল? কীভাবে একজন ইহুদি ব্যক্তি পরিত্রাণ পেতে পারে? ঈশ্বরের কি এখনো ইস্রায়েলের জন্য একটি পরিকল্পনা আছে? এই অধ্যায়গুলি পৌলের সুসমাচারের বার্তার ব্যাখার সাথে সাথে সেই প্রশ্নগুলির উত্তর দেয়।
[1]“কিন্তু ওহে মানুষ, তুমি কে যে ঈশ্বরের প্রতিবাদ করো?” (রোমীয় ৯:২০)। কেউ কেউ ঈশ্বরের ন্যায়বিচার পরীক্ষা করার চেষ্টা করে এমন কোনো ব্যক্তিকে তিরস্কার করার জন্য এই পদটি ব্যবহার করেছেন। তারা বলে যে ঈশ্বরের ন্যায়বিচার আমাদের চেয়ে এত উচ্চতর যে আমরা তা বুঝতে পারি না।
ন্যায়বিচারের এমন কোনো উচ্চস্তর আছে যেখানে কালো সাদা হয়ে যায় এবং মন্দ আসলে ভালো হয়? যদি একজন মানব বিচারক শিশুদের শাস্তি দেন, একইভাবে ভুল এবং ইচ্ছাকৃত অপরাধের বিচার করেন এবং যা তাঁরা প্রতিরোধ করতে পারেন না তার জন্য লোকেদের শাস্তি দেন, আমরা বলব না যে তিনি উচ্চতর স্তরের ন্যায়বিচার অনুসারে বিচার করছেন, বরং বলব তিনি অন্যায় করেছেন।
ঈশ্বরের ন্যায়বিচার উচ্চতর কিন্তু আমাদের বিপরীত নয়। আমাদের ন্যায়বিচারের অনুভূতি তাঁর কাছ থেকে আসে এবং তাঁর মানদণ্ডের উপর ভিত্তিশীল। তিনি আমাদেরকে সেই একই অর্থে পবিত্র হতে আদেশ করেন যা প্রকাশ করে যে তিনি পবিত্র। যদি কখনো কখনো তাঁর কাজটি আমাদের কাছে অন্যায্য বলে মনে হয়ে থাকে, তার কারণ হল আমরা সমস্ত ঘটনা দেখতে পাই না, কারণ আমাদের মূল্যবোধগুলি খুব ক্ষণস্থায়ী এবং আমাদের উপলব্ধিগুলি আমাদের নিজস্ব ইচ্ছা দ্বারা বিকৃত হয়।
ঈশ্বর কেবল ন্যায্য হওয়ার দাবি করেন না এবং তাঁর সৃষ্টিসমূহের কাছে তাঁর উপায় ব্যাখ্যা করতে অস্বীকার করেন না। পরিবর্তে, রোমীয় পুস্তক জোর দেয় যে ঈশ্বরের ন্যায়বিচার দৃশ্যমান। যারা ঈশ্বরকে প্রত্যাখ্যান করে তারা অজুহাতহীন (১:২০) কারণ তারা ঈশ্বর সম্পর্কে জানে। পাপীরা জানে যে তারা বিচারের যোগ্য (১:৩২)। রোমীয় ২ অধ্যায় সম্পূর্ণরূপে ঈশ্বরের বিচারের নিরপেক্ষতা এবং ধারাবাহিকতার উপর ভিত্তিশীল। প্রায়শ্চিত্তের কাজ হল যাতে ঈশ্বর ন্যায়পরায়ণ হতে পারেন যদিও তিনি পাপীদের ন্যায়সঙ্গত করেন (৩:২৬)।
এটা স্পষ্ট যে ঈশ্বর আমাদের দেখতে চান যে তিনি ন্যায়পরায়ণ। এই কারণে, ঈশ্বর তাঁর পরিত্রাণের নীতিগুলি ব্যাখ্যা করেছেন, সেইসাথে এটিও ব্যাখ্যা করেছেন যে কেন সেগুলি ন্যায়সঙ্গত। আমাদের পক্ষে প্রকৃত অর্থে ঈশ্বরের উপাসনা করা সম্ভব হবে না যদি না আমরা দেখতে পাই যে তিনি ন্যায়পরায়ণ। আমরা যদি বিশ্বাস না করি যে ঈশ্বর ন্যায়পরায়ণ, তাহলে তাঁর প্রতি আমাদের আনুগত্য হবে একজন অত্যাচারী বা ডাকাতের আনুগত্যের মতো।
অতএব, ঈশ্বর নিজেকে বিচারের সম্মুখীন করার অনুমতি দেন, অথবা এমনকি নিজেকেও সেখানে রাখেন (৩:৪)। তিনি আত্মবিশ্বাসী যে তাঁর কাজ সত্য ন্যায়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। ঈশ্বরের কাজের একটি সৎ পরীক্ষা তাঁকে ধার্মিক এবং পাপীকে অপরাধী হিসেবে দেখাবে।
► ঈশ্বরের কাজের ন্যায়বিচার বোঝা কেন আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ? আমরা কীভাবে জানি যে ঈশ্বর চান আমরা যেন তাঁর ন্যায়বিচার বুঝতে পারি?
ঈশ্বরের সার্বভৌমত্বের একটি বাইবেলভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি:
ঈশ্বর লোকেদের পরিণতিসহ প্রকৃত পছন্দ নির্বাচন করার অনুমতি দেওয়ার জন্য বেছে নিয়েছেন।
ঈশ্বর মানুষের নির্ধারিত পছন্দে সাড়া দেন (রোমীয় ১:২৪, ২৬, ২৮)।
যেকোনো ব্যক্তি যা কিছুই করুক, ঈশ্বর তাঁর চূড়ান্ত পরিকল্পনা সম্পন্ন করার জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী এবং জ্ঞানী।
প্রত্যেক ব্যক্তি নির্ধারণ করে যে সে সুসমাচার গ্রহণ করবে কিনা এবং সেই ভিত্তিতেই সে পরিত্রাণ পায় বা প্রত্যাখ্যাত হয়। ঈশ্বর পরিত্রাণের প্রস্তাব দেন, মানুষকে তাদের দোষের উপলব্ধি প্রদান করেন, তাদেরকে অনুগ্রহের আকাঙ্খা দান করেন, এবং তাদেরকে বিশ্বাস করার ক্ষমতা প্রদান করেন। তিনি অবিশ্বাসীদের অনুতপ্ত করতে প্ররোচিত করার জন্য বার্তাবাহকদের পাঠান। কিন্তু স্বতন্ত্র ব্যক্তি পরিত্রাণের বিষয়ে নিজের সিদ্ধান্ত নেয়।
“অনন্তকালীন ঈশ্বর হতে হলে তাঁকে অবশ্যই সমস্ত শয়তান, সমস্ত স্বর্গদূত এবং সমস্ত মানুষের সামনে অভিযোগের ঊর্ধ্বে দাঁড়াতে সক্ষম হতে হবে। কেউ তাকে অন্যায়ের জন্য [যথর্থই] অভিযুক্ত করতে সক্ষম হবে না।”
আর. জি. ফ্লেক্সন
(R.G. Flexon, Rudiments of Romans)
প্যাসেজের অধ্যয়ন - রোমীয় ৫ম পর্ব, ১ নং প্যাসেজ
৯ অধ্যায়ের মূল পয়েন্ট
ঈশ্বর পরিত্রাণের পথ নির্ধারণ করেছেন, এবং অন্য কোনো উপায়ে কেউ পরিত্রাণ লাভ করতে পারে না।
৯ অধ্যায়ের সারসংক্ষেপ
এই অধ্যায়টি প্রায়শই এভাবে ব্যাখ্যা করা হয় যে ঈশ্বর এমন একটি ভিত্তিতে কে রক্ষা পাবে এবং কে হারিয়ে যাবে তা বেছে নেন যা আমরা জানতে পারি না। প্রকৃতপক্ষে, মূল বিষয় হল যে ঈশ্বর পরিত্রাণের পথ নির্ধারণ করেছেন, এবং অন্য কোনো উপায়ে কেউ পরিত্রাণ লাভ করতে পারে না। তাঁর সার্বভৌমত্ব কোনো মাপকাঠি ছাড়াই কিছু লোককে বেছে নেওয়া এবং অন্যদের প্রত্যাখ্যান করার দ্বারা প্রদর্শিত হয় না। তাঁর সার্বভৌমত্ব তাঁর মানদণ্ড নির্ধারণের দ্বারা প্রদর্শিত হয় – যা হল পরিত্রাণের পদ্ধতির পরিকল্পনা।
► একজন শিক্ষার্থীকে গ্রুপের জন্য রোমীয় ৯:১-৫ পড়তে হবে।
পদের টীকাভাষ্য
(৯:১-৩) পৌল ইস্রায়েলের জন্য বেদনাদায়ক শোক প্রকাশ করেছিলেন কারণ তারা আত্মিকভাবে হারিয়ে গিয়েছিল। তিনি তাদের ভাই [ভাইবোন] বলে উল্লেখ করেছেন। পৌল ইহুদিদের ধর্মে পারদর্শী ছিলেন। তিনি তাদের পন্ডিতদের সম্মান করতেন। তিনি এটা বুঝতে পেরে দুঃখিত হয়েছিলেন যে বেশিরভাগ ইহুদী শিক্ষক এবং নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা এবং সেইসব লোক যাদের তিনি পরিচর্যা করেছিলেন তাদের বেশিরভাগই খ্রিষ্টকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
(৯:৪-৫) ইস্রায়েল মহান আত্মিক সুবিধাসম্পন্ন একটি জাতি ছিল।
তারা প্রথমে ঈশ্বরকে তাদের পিতা হিসেবে পেয়েছিল।
তারা প্রথমে ঈশ্বরের প্রকাশিত মহিমা দেখেছিল।
তাদের কাছে
তাঁর আশীর্বাদের শর্ত হিসেবে চুক্তিগুলি ছিল।
বিধান ছিল।
উপাসনার পদ্ধতি ছিল।
চূড়ান্ত পরিত্রাণের প্রতিজ্ঞাসমূহ ছিল।
পিতৃপুরুষেরা ইহুদি ছিল।
যিশু একজন ইহুদি হিসেবে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
পৌল আগে ৩:২-১-এ বলেছেন যে ইহুদিদের মহান সুযোগ-সুবিধা ছিল।
ইহুদি ধর্ম, খ্রিষ্টবিশ্বাসের শিকড়
ইহুদি ধর্মকে খ্রিষ্টবিশ্বাসের শিকড় বলা যেতেই পারে। এমনকি এখনো খ্রিষ্টবিশ্বাসের সাথে ইহুদি ধর্মের অন্য যেকোনো ধর্মের চেয়ে অনেক বেশি মিল আছে। খ্রিষ্টকে প্রত্যাখ্যান না করা পর্যন্ত ইহুদি ধর্ম মিথ্যা ধর্মে পরিণত হয়নি।
খ্রিষ্টবিশ্বাস এবং ইহুদি ধর্মের মধ্যে কিছু সংযোগ এখানে তালিকাভুক্ত করা হল:
১। খ্রিষ্টবিশ্বাসী এবং ইহুদি ধর্ম অনুসরণকারীরা সেই একই ঈশ্বরের উপাসনা করে এবং ঈশ্বরের থেকে সুস্পষ্ট প্রকাশ লাভ করেছে।
২। ইহুদি ধর্ম খ্রিষ্টবিশ্বাসের তাত্ত্বিক এবং দার্শনিক ভিত্তি প্রদান করে। ইস্রায়েল একেশ্বরবাদী ছিল এবং এমন এক ঈশ্বরে বিশ্বাসী ছিল যিনি চিরস্থায়ী, নিষ্কলঙ্ক এবং পবিত্র। ঈশ্বর সবকিছুই ভালো সৃষ্টি করেছেন, কিন্তু মন্দ ও দুঃখকষ্ট এসেছে পাপের কারণে। মানুষ ঈশ্বরের প্রতিমূর্তিতে একটি বিশেষ সৃষ্টি, এবং সে মুক্তি পাওয়ার পরে একটি মহিমান্বিত ভবিষ্যতের অধিকারী। আমরা এই সত্যগুলি অনুমান করি, কিন্তু সেগুলি প্রাচীন ইস্রায়েলের চারপাশের সমস্ত ধর্মের সাথে বিপরীত ছিল। এই সত্যগুলি প্রথম ইস্রায়েলের কাছেই প্রকাশিত হয়েছিল।
৩। খ্রিষ্টবিশ্বাসী এবং ইহুদি ধর্ম অনুসরণকারীরা শাস্ত্র হিসেবে পুরাতন নিয়মকে গ্রহণ করে, কিন্তু ইহুদি ধর্ম অনুসরণকারীরা নতুন নিয়মকে গ্রহণ করে না।
৪। খ্রিষ্টবিশ্বাসের প্রবর্তক যিশু একজন ইহুদি ছিলেন এবং তাঁর লোকদের ধর্মকে নিশ্চিত করেছিলেন। তিনি এর প্রকৃত অগ্রাধিকারগুলি বর্ণনা করেছিলেন এবং ফরীশীদের বিকৃতির নিন্দা করেছিলেন। তিনি একটি নতুন ধর্ম শুরু করার দাবি করেননি কিন্তু পুরনোটি পূরণ করেছিলেন।
৫। ইহুদি ধর্মের মূল ছিল মশীহের আশা। প্রথম খ্রিষ্টবিশ্বাসীরা ছিল সেই ইহুদি যারা বিশ্বাস করত যে যিশু হলেন ইহুদি মশীহ।
প্যাসেজের অধ্যয়ন - রোমীয় ৫ম পর্ব, ১ নং প্যাসেজ
► একজন শিক্ষার্থীকে গ্রুপের জন্য রোমীয় ৯:৬-১৬ পড়তে হবে।
পদের টীকাভাষ্য (অব্যাহত)
(৯:৬-৯) তাদের মধ্যে কাউকে কাউকে পরিত্রাণ দেওয়া হয়েছে; ঈশ্বরের বাক্যের প্রভাব আছে। ঈশ্বরের লোকেরা কেবল তারা নয় যারা অব্রাহামের জৈবিক বংশধর। তারা হল সেই লোক যারা ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতি বিশ্বাস করে পরিত্রাণ পায়।
ঈশ্বর অব্রাহামকে বেছে নেওয়ার সময় থেকে এইভাবেই পরিত্রাণের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। ঈশ্বরের পরিত্রাণ পরিকল্পনা, যা ইসাহাকের মাধ্যমে অব্যাহত ছিল, তা আসলে বিশ্বাসের প্রতিক্রিয়া হিসেবে ঈশ্বরের একটি কাজ ছিল। পরিত্রাণের জন্য ঈশ্বরের পদ্ধতি হল প্রতিশ্রুতি, তারপর বিশ্বাস, তারপর অলৌকিক কাজ। ইসাহাকের জন্ম একটি অলৌকিক ঘটনা ছিল।
ইসমাইল প্রাকৃতিক উপায়ে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, অলৌকিকভাবে নয়, এবং ঈশ্বর তাঁকে পরিত্রাণের পরিকল্পনার জন্য ব্যবহার করেননি। একই নীতি দ্বারা, ঈশ্বর পরিত্রাণের জন্য কাজ গ্রহণ করেন না। ইহুদিরা যারা কাজের দ্বারা পরিত্রাণ পেতে চেয়েছিল তারা ঈশ্বরের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল ঠিক যেমন ইসমাইলকে প্রতিশ্রুতির পুত্র হওয়া থেকে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল।
► যাকোব এবং এষৌয়ের ঘটনাটি কী? কিছু লোক মনে করে যে এই পদগুলি বলে যে তাঁদের জন্মের আগে, ঈশ্বর বেছে নিয়েছিলেন তিনি কাকে রক্ষা করবেন। এই পদগুলি আসলে কী বলে?
(৯:১০-১৩) ঈশ্বর যখন এষৌর পরিবর্তে যাকোবকে বেছে নিয়েছিলেন, তখন তিনি কাকে বাঁচাতে চান তা বেছে নিচ্ছিলেন না। পরিত্রাণের পরিকল্পনা পূর্ণ করার জন্য তিনি যাকে ব্যবহার করবেন তাকে বেছে নিয়েছিলেন। এই অধ্যায়ের মূল বিষয় হল: পরিত্রাণের উপায় নির্ধারণের জন্য ঈশ্বরের অধিকার। পুরাতন নিয়মে এষৌয়ের জীবনের রেকর্ড দেখায় যে তিনি প্রকৃত অর্থেই হৃদয় পরিবর্তন করেছিলেন এবং হয়তো রক্ষা পেয়েছিলেন। তিনি পরিত্রাণ থেকে প্রত্যাখ্যাত হননি কিন্তু নির্বাচিত জাতির পিতা এবং মশীহ হওয়া থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়েছিলেন। ঘৃণা করা কথাটির সহজ অর্থ হল “অন্যের সাপেক্ষে প্রত্যাখ্যান করা,” যেমন এটির অর্থ ছিল যখন যিশু বলেছিলেন যে তাঁর প্রতি আমাদের আনুগত্যের তুলনায় আমাদের বাবা ও মাকে অবশ্যই অপ্রিয় জ্ঞান করতে হবে (লূক ১৪:২৬)।
ঈশ্বর যাকোবকে তাঁর গুণের জন্য বেছে নেননি বা এষৌকে ব্যর্থতার জন্য প্রত্যাখ্যান করেননি। অংশটি প্রকাশ করেছে যে ঈশ্বর যখন তাঁর নির্বাচন সম্পন্ন করেছিলেন তখন তাঁরা কোনো ভালো বা মন্দ করেননি। অবশ্যই, ঈশ্বর তাঁদের ভবিষ্যৎ জানতেন। মূল বিষয়টি হল যে ঈশ্বর তাঁর নিজের পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্বাচন করেছিলেন।
► কিছু লোক বলে যে ৯:১৪-১৬ প্রমাণ করে যে ঈশ্বর কাদেরকে পরিত্রাণ দেবেন তা তিনি এমন কোনো কারণে নির্বাচন করেন যা আমরা জানি না। তারা বলে যে আমাদের কাজ এবং পছন্দ নির্ধারণ করে না যে আমরা পরিত্রাণ পাব কিনা। এই পদগুলি আসলে কী বলছে?
(৯:১৪-১৬) ঈশ্বর কাকে করুণা দেখাবেন তা তিনি নিজে বেছে নেন। তার মানে এই নয় যে তিনি এটা কোনো ভিত্তি ছাড়াই করেন বা এমন কোনো ভিত্তিতে করেন যা আমরা জানতে পারি না। ঈশ্বর তাঁর করুণার ভিত্তি দেখিয়েছেন: “দুষ্টলোক তার পথ, মন্দ ব্যক্তি তার চিন্তাধারা পরিত্যাগ করুক। সে সদাপ্রভুর কাছে ফিরে আসুক, তাহলে তিনি তার প্রতি করুণা প্রদর্শন করবেন, সে আমাদের ঈশ্বরের কাছে ফিরে আসুক, তাহলে তিনি অবাধে ক্ষমা করবেন” (যিশাইয় ৫৫:৭)।
তিনি স্পষ্টভাবে আমাদের বলেছেন যে আমরা যদি বিশ্বাস করি তাহলে আমরা পরিত্রাণের জন্য মনোনীত এবং যদি না করি তাহলে প্রত্যাখ্যাত। অতএব, এটি একজন ব্যক্তি কীভাবে পরিত্রাণ পেতে পারে তা নির্বাচন করা তার ইচ্ছানুযায়ী নয়। পরিত্রাণ অবশ্যই ঈশ্বরের করুণা দ্বারা তাঁর পরিকল্পিত উপায়ে প্রাপ্ত হতে হবে।
► একজন শিক্ষার্থীকে গ্রুপের জন্য রোমীয় ৯:১৭-২৩ পড়তে হবে। ঈশ্বর কি ফরৌণকে একজন মন্দ লোক হিসেবে সৃষ্টি করেছিলেন এবং তাকে নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন যাতে তিনি মন্দ কাজ করতে পারেন?
(৯:১৭-১৮) দণ্ডাজ্ঞাপ্রাপ্ত হওয়ার জন্য ফরৌণের জন্ম হয়নি, কিন্তু ঈশ্বর ফরৌণকে তাঁর কর্তৃত্বের অবস্থানে রেখেছিলেন কারণ ঈশ্বর জানতেন তিনি কী করবেন। উন্নত করেছি কথাটি তাঁর সৃষ্টিকে বোঝায় না, বরং শাসক হিসেবে তাঁর অভিষেককে নির্দেশ করে। যারা বিশ্বাস করে তাদের প্রতি ঈশ্বর করুণা করেন এবং যারা বিশ্বাস করে না তাদের কঠিন করেন। কঠিন হওয়ার অর্থ এই নয় যে ঈশ্বর একজন ভালো ব্যক্তিকে খারাপে পরিণত করেন। ঈশ্বর ফরৌণকে তিনি ইতিমধ্যে যা করতে চেয়েছিলেন তা সম্পাদন করার সংকল্প দিয়েছিলেন।
যারা তাদের হৃদয়কে কঠিন করেছে তাদেরকে তাদের অবস্থার জন্য দোষী সাব্যস্থ করা হয়। অতএব, বিচার অনুযায়ী, তাদের নির্বাচনগুলি প্রকৃত। আগে, ২:৪-৫-এ, অইহুদি বা পরজাতিরা হৃদয়ের কঠিনতার জন্য দণ্ডাজ্ঞাপ্রাপ্ত যা তাদের সত্যকে স্বেচ্ছাকৃত প্রত্যাখ্যানের সাথে সংযুক্ত। (এছাড়াও যিরমিয় ১৯:১৫, নহিমিয় ৯:২৫-২৯, মার্ক ১৬:১৪, এবং ইব্রীয় ৩:৭-১৩ দেখুন।) ফরৌণও যদি প্রথমে ঈশ্বরকে প্রত্যাখ্যান না করতেন তাহলে তাঁরও কঠিন হৃদয় থাকত না।
(৯:১৯) এখানে কেউ আপত্তি উত্থাপন করে: “ঈশ্বর যদি মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন, যেমন তিনি ফরৌণকে করেছিলেন, তবে কীভাবে কারোর বিচার করা যায়? কেউই তাঁর ইচ্ছাকে সফলভাবে প্রতিহত করতে পারেনি।” আপত্তিকারী এমনভাবে কথা বলে যেন ঈশ্বরকে প্রতিরোধ করার জন্য একজন ব্যক্তিকে ক্ষমা করা উচিত যদি শেষ পর্যন্ত ঈশ্বর যা চান তা করতে তাকে বাধ্য করা হয়। কিন্তু ঈশ্বর তাদের মধ্যে পার্থক্য করতে সক্ষম যারা তাঁকে স্বেচ্ছায় সাড়া দেয় এবং যারা তা করে না।[1]
(৯:২০-২৩) ঈশ্বর কিছু লোককে বিচারের জন্য এবং কিছু লোককে করুণার জন্য নির্বাচন করতে সক্ষম, যদিও তিনি শেষ পর্যন্ত সকলের দ্বারা মহিমান্বিত হবেন (কারণ তিনি তাঁর বিচার এবং তাঁর করুণা উভয়ের জন্যই মহিমান্বিত)। তাঁর নির্বাচনের একটি ভিত্তি রয়েছে এবং নির্বাচন করার অধিকার রয়েছে। ঈশ্বর গ্রহণযোগ্যতার জন্য তাঁর মানদণ্ড নির্ধারণ করেন এবং এটি অপরিবর্তনীয়।
কুমোর ঠিক করতে পারে যে সে মাটি দিয়ে কী করবে। সে এটির একটি অংশকে ফুলদানিতে এবং আরেকটি অংশকে আবর্জনার পাত্রে পরিণত করতে পারে। একইভাবে, ঈশ্বর সিদ্ধান্ত নেন যে কিছু লোক কেবল বিচারের জন্য উপযুক্ত এবং অন্যরা করুণার জন্য উপযুক্ত। গ্রীক ক্রিয়াপদটি নির্দিষ্ট করে না যে ক্রিয়াটি কে করেছে। এর অর্থ হতে পারে যে লোকেরা বিচারের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করেছে। এই বিবৃতির সাথে এটি সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে যে বিচারের সময় না আসা পর্যন্ত ঈশ্বর তাদের বিদ্রোহ সহ্য করেন। ঈশ্বর তাদের বিচারের জন্য সৃষ্টি করেননি বা তাদের পাপী বানাননি। তাদের বিচার তাদের নিজস্ব পছন্দের জন্য হবে। ঈশ্বর যে তাঁর পছন্দের ক্ষেত্রে সার্বভৌম তার মানে এই নয় যে তিনি নির্বিচারে নির্বাচন করেন বরং তিনি তাঁর নিজের মান অনুযায়ী বেছে নেন। তিনি বিচারের জন্য দুষ্টদের এবং পরিত্রাণের জন্য বিশ্বাসীদের বেছে নেন।
“কেন আমাকে এইরকম বানিয়েছ?” প্রশ্নটির অর্থ “কেন তুমি আমাকে শাস্তির জন্য সৃষ্টি করেছ?” নয়, বরং এর অর্থ হল “কেন তুমি সিদ্ধান্ত নিলে যে আমি বিচারের জন্য উপযুক্ত?” কিন্তু ঈশ্বরের তাঁর ন্যায়বিচার নির্ধারণ ও প্রকাশ করার অধিকার রয়েছে।
কুমোরের দৃষ্টান্তটি যিরমিয় ১৮:১-১৮ থেকে নেওয়া হয়েছে। মূল পদগুলি হল ১৮:৭-১০। ১৮:৮ বলে, “কিন্তু সেই যে জাতিকে আমি সতর্ক করলাম, তারা যদি তাদের মন্দ কাজের জন্য অনুতাপ করে, তাহলে আমি কোমল হব এবং তাদের প্রতি যে বিপর্যয় আনার পরিকল্পনা করেছিলাম, তা নিয়ে আসব না।”
► আপনি কীভাবে কুমোর এবং মাটির দৃষ্টান্তটি ব্যাখ্যা করবেন? ঈশ্বর কি তাঁর ক্রোধ দেখানোর জন্য কিছু লোককে সৃষ্টি করেছেন? এই কথার অর্থ কী যে তিনি মাটি থেকে বিভিন্ন ধরনের জিনিস তৈরি করেন?
কেউ কেউ এই অধ্যায় থেকে উপসংহারে এসেছেন যে, ঈশ্বর কিছু মানুষকে বিচারের জন্য এবং কিছু মানুষকে করুণা করার জন্য সৃষ্টি করেছেন। তবে, পৌল নিজেই এই অধ্যায়ের উপসংহারে তাঁর মূল কথা বলেছেন (৯:৩০-৩৩)। এটা গুরুত্বপূর্ণ যে আমরা যেন লেখককে তাঁর নিজস্ব দৃষ্টান্ত থেকে তাঁর নিজস্ব বিষয়বস্তু তৈরি করতে দিই। আমরা অবশ্যই লেখকের কাহিনী প্রয়োগের সাথে এমন কোনো তর্ক করব না যেটি তিনি নিজে যা বলেছেন তাঁর বিপরীত হয়। পৌলের মূল বক্তব্য হল: ঈশ্বর একজন ব্যক্তির বিচার করবেন সেই ব্যক্তি বিশ্বাস করে কিনা তার ভিত্তিতে। কুমোর হিসেবে, গ্রহণের ভিত্তি নির্ধারণ করার অধিকার তাঁর রয়েছে।
আমরা ঈশ্বরের সার্বভৌমত্বে আনন্দ করতে পারি কারণ তিনি সর্বদাই জ্ঞানী, উত্তম, প্রেমময়, এবং তাঁর প্রতিটি কাজে ন্যায়পরায়ণ। যদিও তাঁর সম্পূর্ণ কর্তৃত্ব আছে, তবুও তিনি কোনো অন্যায় করেন না। তাঁর কাজগুলিই সর্বদাই তাঁর নিজের চরিত্রের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
অধ্যায়টির মূল বিষয় এই নয় যে ঈশ্বর কোনো মাপকাঠি ছাড়াই যাকে চান তাকে বেছে নেন। রোমীয় ৯ অধ্যায়ের মূল বিষয় হল যে ঈশ্বর এমন একটি মানদণ্ড নির্ধারণ করেছেন যা নির্ধারণ করে যে তিনি কাকে পরিত্রাণের জন্য বেছে নেবেন। মাপকাঠিটি হল পরিত্রাণের বিশ্বাস।
প্যাসেজের অধ্যয়ন - রোমীয় ৫ম পর্ব, ১ নং প্যাসেজ
► একজন শিক্ষার্থীকে গ্রুপের জন্য রোমীয় ৯:২৪-৩৩ পড়তে হবে।
পদের টীকাভাষ্য (অব্যাহত)
(৯:২৪-২৬) বহু অইহুদি বা পরজাতি ঈশ্বরের লোকেদের অংশ হয়ে উঠেছিল, যদিও তারা জাতিগত পরিচয়ের ভিত্তিতে ঈশ্বরের লোক হিসেবে খ্যাত নয়। এটি এই পত্রটির মহৎ মিশনারি উদ্দেশ্যকে সংযুক্ত করে: জগতের প্রত্যেকের কাছে সুসমাচার প্রচারিত হতে পারে।
(৯:২৭-২৯) বহু ইহুদি প্রত্যাখ্যাত হবে, এবং কেবল একটি অবশিষ্টাংশই পরিত্রাণ পাবে। ইহুদিরা কেবল ইহুদি বলেই নিজে নিজেই বা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই পরিত্রাণ পেয়ে যাবে তা নয়। ঈশ্বর যদি করুণা না করে ন্যায়বিচার অনুযায়ী কাজ করতেন, তাহলে তারা সদোমের মতো সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যেত।
(৯:৩০-৩৩) এটি হল অধ্যায়টির উপসংহার। লেখককে অবশ্যই তাঁর নিজের উপসংহার লেখার অনুমতি দিতে হবে। অধ্যায়ের বিষয়বস্তু হল ঈশ্বর পরিত্রাণের উপায় নির্ধারণ করেছেন। যারা বিধানের ভিত্তিতে নিজেদের ধার্মিকতা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছিল তারা ব্যর্থ হয়েছে। যারা বিশ্বাসের দ্বারা ধার্মিকতা খোঁজে তারা সফল হয়। যে ব্যক্তি তার নিজের ধার্মিকতা প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করে সে ঈশ্বর যে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন তাতে হোঁচট খায়, কিন্তু যে বিশ্বাস করে সে লজ্জিত হবে না।
৯ নং পাঠের পর্যালোচনামূলক প্রশ্ন
(১) আমরা কীভাবে জানতে পারি যে ঈশ্বর চান যেন আমরা তাঁর ন্যায়বিচার বুঝতে পারি?
(২) কেন আমাদের জন্য এটি দেখা গুরুত্বপূর্ণ যে ঈশ্বর ন্যায়পরায়ণ?
(৩) ঈশ্বরের সার্বভৌমত্বের একটি বাইবেলভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি কী?
(৪) রোমীয় ৯ অধ্যায়ের মূল পয়েন্ট বা বিষয়বস্তুটি কী?
(৫) ইস্রায়েলের আত্মিক সুবিধাগুলি কী কী ছিল?
(৬) খ্রিষ্টধর্ম এবং ইহুদি ধর্মের মধ্যে পাঁচটি সংযোগ কী কী?
(৮) কেন আমরা ঈশ্বরের সার্বভৌমত্বে আনন্দ করতে পারি?
৯ নং পাঠের অ্যাসাইনমেন্ট
১। ঈশ্বর কীভাবে সার্বভৌম এবং তবুও মানুষের পছন্দের প্রতি সাড়া দেন তা ব্যাখ্যা করে একটি পৃষ্ঠায় লিখুন। রোমীয় ৯ অধ্যায়টি ব্যবহার করুন, তবে অন্যান্য শাস্ত্রাংশও ব্যবহার করুন।
২। অন্যান্য মন্ডলীর বিশ্বাসীদের সঙ্গে আপনাকে অন্তত দুটি কথোপকথন প্রস্তুত করতে হবে। আপনি তাদের কাছে জানতে চাইবেন যে তারা ঈশ্বরের সার্বভৌমত্বের বিষয়ে কী ভাবে। আপনাকে এই বিষয়টির সাথে রোমীয় অধ্যায়ের যে অংশগুলি প্রাসঙ্গিক তা ব্যাখ্যা করতে হবে। আপনি কথোপকথনের একটি বর্ণনা লিখবেন এবং ক্লাস লিডারকে তা জমা দেবেন।
SGC exists to equip rising Christian leaders around the world by providing free, high-quality theological resources. We gladly grant permission for you to print and distribute our courses under these simple guidelines:
No Changes – Course content must not be altered in any way.
No Profit Sales – Printed copies may not be sold for profit.
Free Use for Ministry – Churches, schools, and other training ministries may freely print and distribute copies—even if they charge tuition.
No Unauthorized Translations – Please contact us before translating any course into another language.
All materials remain the copyrighted property of Shepherds Global Classroom. We simply ask that you honor the integrity of the content and mission.