পাঠের উদ্দেশ্য
(১) সচেতনভাবে শাস্ত্র পাঠ করার গুরুত্ব বোঝা।
(২) অধ্যয়ন করা প্রতিটি পদ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা।
(৩) একটি পদ্ধতিগত শাস্ত্র অধ্যয়নের জন্য পরিকল্পনা করা।
(৪) নির্বাচিত পদগুলির উপর বিশদ পর্যবেক্ষণ অনুশীলন করা।
Search through all lessons and sections in this course
Searching...
No results found
No matches for ""
Try different keywords or check your spelling
2 min read
by Randall McElwain
(১) সচেতনভাবে শাস্ত্র পাঠ করার গুরুত্ব বোঝা।
(২) অধ্যয়ন করা প্রতিটি পদ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা।
(৩) একটি পদ্ধতিগত শাস্ত্র অধ্যয়নের জন্য পরিকল্পনা করা।
(৪) নির্বাচিত পদগুলির উপর বিশদ পর্যবেক্ষণ অনুশীলন করা।
[1]► এই কোর্সের জন্য আপনারা যেখানে সমবেত হয়েছেন, সেখানে আসার জন্য আপনার গ্রুপের একজন বা দু’জনের কাছ থেকে তারা যে রাস্তা দিয়ে এসেছে সেটির বর্ণনা জানতে চান। যতটা সম্ভব খুঁটিনাটি যোগ করুন। আপনি কোনো রেস্টুরেন্ট, চার্চ, বা দোকানের সামনে দিয়ে এসেছেন? আপনি কতগুলো মোড় পেরিয়ে এসেছেন বা কতগুলো রেড সিগন্যালের থেমেছেন? কতগুলো মোড় ঘুরেছেন? কোনো নতুন বা অস্বাভাবিক কিছু পেরিয়ে এসেছেন যেটা সাধারণত আপনার আসার রাস্তায় পড়ে না? প্রত্যেকের বর্ণনা শেষ হলে, আলোচনা করুন কতগুলি পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে এবং কতগুলি লক্ষ্য করা হয়নি।
যখন গোপাল বাইবেল পড়ে, সে একটি মানসিক ছবি দিয়ে শেষ করে। যদি আপনি গোপালকে মার্ক ১:২৯-৩১ পড়তে এবং তা সংক্ষিপ্ত করতে বলতেন, সে উত্তর দিত, “যিশু চারজন শিষ্যকে (শিমোন,আন্দ্রিয়, যাকোব ও যোহন) নিয়ে গালীলের সমাজভবন থেকে বেরিয়ে এলেন। তারা শিমোনের বাড়িতে গিয়েছিলেন যেখানে শিমোনের শাশুড়ি জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন। যিশু তাকে তার হাত ধরে উঠিয়ে বসান এবং তার জ্বর সঙ্গে সঙ্গে ছেড়ে যায়। তিনি এতই সুস্থ বোধ করেছিলেন যে তিনি তাদের জন্য খাবার বানিয়ে দিয়েছিলেন। তিনি এমনকি সুস্থ হয়ে উঠে বিশ্রামের প্রয়োজনই বোধ করেননি!”
যখন জিতেশ বাইবেল পড়ে, সে বাক্যগুলি পড়ে কিন্তু বিস্তারিত বিষয় লক্ষ্য করে না। যদি আপনি জোনাথনকে মার্ক ১:২৯-৩১ পড়তে এবং তা সংক্ষিপ্ত করতে বলতেন, সে উত্তর দিত, “যিশু শিমোনের বাড়িতে গিয়েছিলেন এবং একজনকে সুস্থ করেছিলেন।”
এদের মধ্যে কোন পাঠক পর্যবেক্ষণ করেছে? কোন পাঠক কাহিনীটি বেশিদিন মনে রাখতে পারবে? কোন পাঠকের কাছে তুলনামূলকভাবে বেশি তথ্য আছে যার উপর ভিত্তি করে কাহিনীটি ব্যাখ্যা করা যাবে? উত্তরটি খুবই সুস্পষ্ট। গোপাল দেখেছিল মার্ক ১:২৯-৩১ পদে কী ঘটেছে। জিতেশ অধ্যায়টি পড়েছিল, কিন্তু সে পর্যবেক্ষণ করেনি।
বাইবেল অধ্যয়নের প্রথম ধাপটি হল পর্যবেক্ষণ। এই পর্যায়ে আমরা প্রশ্ন করি, “শাস্ত্রের এই বিভাগে আমি কী দেখি?” কার্যকারি বাইবেল ব্যাখ্যার একটি চাবিকাঠি হল যতটা বেশি করে সম্ভব পর্যবেক্ষণ করা। এই পাঠে আমরা একটি পদে গুরুত্বপূর্ণ বিশদগুলি পর্যবেক্ষণ করতে শিখব। এটি করার সময় ধৈর্য্যশীল থাকুন; আপনি যত বেশি পর্যবেক্ষণ করবেন, আপনার কাছে ব্যাখ্যার জন্য তত বেশি উপাদান পাবেন।
প্রেরিত ১:৮:
কিন্তু পবিত্র আত্মা তোমাদের উপরে এলে তোমরা শক্তি লাভ করবে, আর তোমরা জেরুশালেমে ও সমস্ত যিহূদিয়ায় ও শমরিয়ায় এবং পৃথিবীর প্রান্তসীমা পর্যন্ত আমার সাক্ষী হবে।
এই একটি পদে আমরা কী পর্যবেক্ষণ করতে পারি?
প্রথম শব্দটি কী?
“কিন্তু।” কিন্তু হল আগের পদগুলিকে নির্দেশ করা একটি সংযোগকারী শব্দ। প্রেরিত ১:৬ পদে শিষ্যরা জিজ্ঞাসা করেছিল, “প্রভু, আপনি কি এই সময়ে ইস্রায়েলীদের কাছে রাজ্য ফিরিয়ে দিতে চলেছেন?” এখন যে আপনি মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হয়েছেন, আপনি কি আপনার রাজ্য প্রতিষ্ঠা করবেন? যিশু দু’টি বিবৃতিতে উত্তর দিয়েছিলেন:
“যে সময় ও দিন নির্দিষ্ট করে রেখেছেন, সেসব তোমাদের জানার কথা নয় …” (প্রেরিত ১:৭)। এটি পিতার দায়িত্ব।
“তোমরা শক্তি লাভ… তোমরা জেরুশালেমে ও সমস্ত যিহূদিয়ায় ও শমরিয়ায় এবং পৃথিবীর প্রান্তসীমা পর্যন্ত আমার সাক্ষী হবে” এটি তোমাদের দায়িত্ব।
কারা জড়িত বা অন্তর্ভুক্ত?
“তোমরা” – কাদের সঙ্গে যিশু কথা বলছেন? প্রেরিতদের সাথে (প্রেরিত ১:২, ৪)। একটু সময় নিয়ে জানতে চান, “এই প্রেরিতরা কারা?” আপনি প্রেরিতদের সম্পর্কে যা যা জানেন তার একটি তালিকা তৈরি করুন। এই পদটি কার সম্পর্কে পঞ্চাশত্তমীতে বিস্ময়কর রূপান্তরকারী শক্তি দেখায়?
তারা ইহুদি; যিশু তাদেরকে শমরিয়াতে পাঠাচ্ছেন।
তারা অশুচি-আত্মাগ্রস্থ একটি ছেলেকে সুস্থ করতে অক্ষম ছিল (মার্ক ৯:১৪-২৯); তারা শক্তিপ্রাপ্ত হবে।
যিশুর গ্রেপ্তারের সময়ে তারা ভয়তে পালিয়ে গিয়েছিল (মথি ২৬:৫৬); তারা পৃথিবীর প্রান্ত পর্যন্ত তাঁর সাক্ষী হবে।
এই বাক্যটির ক্রিয়াপদটি কী?
“লাভ করবে” – এই ক্রিয়াপদটিই আমাদেরকে বলছে যে কী ঘটছে। এইক্ষেত্রে, ক্রিয়াপদের কালটি এমন কিছু দেখাচ্ছে যা তারা ভবিষ্যতে প্রাপ্ত হবে।
তারা কী লাভ করবে?
“শক্তি” - প্রেরিত পুস্তকটি শিষ্যদের পরিচর্যা কাজে এই শক্তিটি দেখাবে।
► এখান থেকে শুরু করুন। এই প্রশ্নগুলির উত্তর দিয়ে, বাকি পদটিতে এগিয়ে যান:
কখন তারা শক্তি গ্রহণ করবে?
কে তাদেরকে শক্তি দেবে?
শক্তির ফলাফল কী? (শক্তি সাক্ষ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। এই শক্তির স্বাভাবিক ফলাফল হবে অন্যদের সাথে সুসমাচার ভাগ করার ইচ্ছা।)
তারা কার সাক্ষী হবে?
কোথায় তারা সাক্ষ্যবহন করবে? (এই চারটি অবস্থান সম্পর্কে আপনি কী জানেন? শমরিয়ার বিশেষত্ব কী? এই ইহুদি শিষ্যরা কী সেখানে যেতে চেয়েছিল?)
জয়ন্তর দৃষ্টিশক্তি খুবই খারাপ ছিল। যখন সে স্কুলে পড়ত, সে তার শিক্ষককে পরিষ্কারভাবে দেখতে পেত না। সে ক্লাসরুমের একদম সামনের দিকে থাকা বোর্ডে লেখা কোনো শব্দ পড়তে পারত না। তারপর একদিন সে চশমা পরা শুরু করেছিল। হঠাৎই সে সবকিছু দেখতে পেয়েছিল যা সে আগে দেখতে পেত না! সে তার শিক্ষকের মুখ পরিষ্কারভাবে দেখতে পাচ্ছিল। বোর্ডে কিছু লেখা হলে সে সহজেই তা পড়তে পারছিল। সে আবেগে আপ্লত ছিল!
সতর্ক ভাবে পর্যবেক্ষণ হল খারাপ দৃষ্টিশক্তি ঠিক করার জন্য চশমা পড়ার মতো। কীভাবে শাস্ত্র পর্যবেক্ষণ করতে হয় তা শেখা আপনাকে শাস্ত্র কী বলছে তা ভালোভাবে বুঝতে সাহায্য করবে।
প্রেরিত ১:৮ পদের উপর অনুশীলন দেখায় আপনি এখন কতটা ভালোভাবে যা পড়ছেন তা পর্যবেক্ষণ করতে পারছেন। আপনার পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা উন্নত করার জন্য কিছু টিপস দেখে নেওয়া যাক। আপনি এমনকিছু প্রশ্ন করতে শিখবেন যা শাস্ত্রকে আরও স্পষ্ট আলোতে নিয়ে আসে। তারপর আপনি অন্যান্য পদ পড়ার অভ্যাস করবেন।
যখন আপনি বাইবেল থেকে একটি পদ পড়ছেন, দয়া করে বলবেন না, “আমি ইতিমধ্যেই এই পদটি জানি!” বরং, ঈশ্বরকে বলুন যেন তিনি নতুনভাবে আপনাকে তাঁর বাক্য বুঝতে সাহায্য করেন। এই অধ্যায়ের সহায়িকাগুলি আপনাকে একটি নতুন অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে পড়তে সাহায্য করতে পারে।[1]
বোঝার জন্য পড়ুন
১০ বছর বয়সী একটি ছেলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে সে প্রতি বছর বাইবেল পড়বে। এটি একটি ভাল উদ্যোগ ছিল; তবে দুর্ভাগ্যবশত সে কার্যকরভাবে বাইবেল পড়তে জানত না। তার একটি ক্যালেন্ডার ছিল যেটিতে প্রতিদিন কতটা পড়তে হবে তা লেখা ছিল, কিন্তু সে প্রায়শই পিছিয়ে পড়ত। রবিবার বিকেলে সে তা পূরণ করার চেষ্টা করেছিল। সে তার ক্যালেন্ডার চেক করে দেখে যে সে ২০টি অধ্যায় পিছিয়ে আছে (লেবীয় পুস্তক!) সুতরাং, সে একদিন বিকেলবেলা পুরো লেবীয় পুস্তক পড়ে ফেলতে চাইল। সে যত দ্রুত সম্ভব পড়ে শেষের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করল। কিন্তু শেষ করার ১০ মিনিট পরেই, সে আর আপনাকে লেবীয় পুস্তকের বার্তাটি বলতে পারল না। সে না বুঝেই পড়ছিল।
বোঝার জন্য পড়া হল একটি পরিশ্রমের কাজ। সত্যের অনুসন্ধানকে বাইবেল এইভাবে ব্যাখ্যা করে: “ও যদি রুপোর মতো তার খোঁজ করো ও গুপ্তধনের মতো তা খুঁজে বেড়াও, তবেই তুমি সদাপ্রভুর ভয় বুঝতে পারবে ও ঈশ্বরের জ্ঞান খুঁজে পাবে” (হিতোপদেশ ২:৪-৫)। সতর্কভাবে শাস্ত্র পড়ুন। প্রশ্ন করুন। বিভিন্ন নোট নিন। মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
আপনি কখনো কখনো আপনার নিজের কথায় বা শব্দ দিয়ে শাস্ত্রের ব্যাখ্যা করে নতুন উপলব্ধি অর্জন করতে পারেন। যদিও আপনার শব্দান্তর একটি পাণ্ডিত্যপূর্ণ অনুবাদ নাও হতে পারে, তবে এটি আপনাকে পাঠ্যটির অর্থ সম্পর্কে গভীরভাবে চিন্তা করতে সাহায্য করতে পারে।
পড়ার সাথে সাথে প্রশ্ন করুন
মনোযোগ দিয়ে পড়ার একটি চাবিকাঠি হল প্রশ্ন করা।
► এই বিভাগে এগিয়ে যাওয়ার আগে লূক ২৪:১৩-৩৫ পড়ুন। এই পাঠে আপনি যেভাবে পড়বেন, সেই অনুযায়ী প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য লূক ২৪ দেখতে থাকুন।
(১) কে?
পাঠ্যটিতে যে ব্যক্তিরা আছে, তারা কারা? আপনি প্রত্যেক ব্যক্তি সম্পর্কে কী জানতে পারেন?
লূক ২৪:১৩-৩৫ পদের ব্যক্তিরা কারা ছিলেন? পুনরুত্থানের দিনে ক্লিওপা এবং একজন নামহীন সঙ্গী[2] ইম্মায়ুসে যাচ্ছিলেন। তারা যিশুর অনুসারী ছিলেন যারা তাঁর অলৌকিক কাজ এবং শিক্ষা সম্পর্কে জানতেন। এই রবিবারে তারাই প্রথম ব্যক্তি হয়ে ওঠেন যারা খ্রিষ্টের কষ্টভোগ এবং পুনরুত্থান স্বয়ং যিশুর কাছ থেকে শুনেছিলেন; তারা পুনরুত্থানের প্রথম সাক্ষী হয়ে ওঠেন।
(২) কী?
টেক্সট বা পাঠ্যটিতে কী ঘটছে? যদি এটি কোনো ঐতিহাসিক পাঠ্য হয়, তাহলে কোন ঘটনাগুলি ঘটেছে? যদি এটি একটি চিঠি হয়, তাহলে লেখক কী শেখানোর চেষ্টা করছেন?
লূক ২৪ অধ্যায়ের ঘটনাটি ছিল যিশুর প্রকাশ। এই দুই ব্যক্তির চোখ যিশুর পুনরুত্থানের বাস্তবতার প্রতি উন্মুক্ত হয়েছিল (লূক ২৪:৩১)।
(৩) কখন?
আগের প্রশ্নটির মতোই, আমাদের পড়ার ক্ষেত্রে সময় একটি প্রেক্ষাপট (context) প্রদান করে। বাইবেল অধ্যয়নের পর্যবেক্ষণ পর্যায়ে আমরা পাঠটিতে সময় সংক্রান্ত বিষয় লক্ষ্য করি। লূক ২৪:১৩ থেকে আমরা জানতে পারি যে ইম্মায়ুসের পথে যাত্রা সেই একই দিনে হয়েছিল যেদিন শূন্য খবর আবিষ্কৃত হয়েছিল।
কবরটি খালি পাওয়ার মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরেই এই দুই শিষ্য যিশুর দেখা পান। এটি আমাদেরকে তাদের আলাপ-আলোচনা অনুযায়ী তাদের অনুভূতি সম্পর্কে জানায় (লূক ২৪:১৫)। গত তিনদিনে এই দুই ব্যক্তি যে মানসিক অনুভূতির অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিলেন তা চিন্তা করুন।
বৃহস্পতিবার, তারা হতাশ হয়েছিলেন কারণ তারা যিশুকে গ্রেপ্তার হতে দেখেছিলেন। শুক্রবার, যিশু শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার সাথে সাথে একটি মশীহ-শাসিত (messianic) রাজ্যের জন্য তাদের সমস্ত আশা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যায়। এরপর আসে রবিবার, এবং সমাধি ছিল শূন্য। ইম্মায়ুসে যাওয়ার সময় তারা ঘটনাগুলির এই রহস্যময় ক্রমটি বোঝার চেষ্টা করেছিলেন।
(৪) কোথায়?
এটি জিজ্ঞাসা করা ভালো, “এটি কোথায় ঘটেছে?” একটি বাইবেল মানচিত্র আপনাকে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পেতে সাহায্য করতে পারে। কিছু বাইবেলের পিছনে ম্যাপ দেওয়া থাকে।
লূক ২৪ অধ্যায়ে ক্লিয়োপা এবং তার সঙ্গী যিরুশালেম থেকে ইম্মায়ুসের দিকে যাচ্ছিলেন, যেটি শহরের পশ্চিমদিকে ১১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ছিল। যখন তারা এই জায়গাটা দিয়ে যাচ্ছিলেন তখন সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তাদের চোখ খুলে যাওয়ার পর, এই দুই ব্যক্তি আনন্দের সাথে যিরুশালেমে ফিরে এসেছিলেন। এই বার্তাটি আর পরের দিনের অপেক্ষায় রেখে দেওয়া যায়নি!
(৫) কেন?
কেন এই শিষ্যরা এত নিরুৎসাহিত হয়েছিল তা আমরা দেখি যখন আমরা সময়জনিত প্রশ্নটির উত্তর দিই। তারা নিরুৎসাহিত হয়েছিল কারণ যিশু মারা যাওয়ার পর একজন মশীহের জন্য তাদের সমস্ত আশা শেষ হয়ে গিয়েছিল।
(৬) কীভাবে?
এই ঘটনাটি দ্বারা কীভাবে এই শিষ্যদের জীবন পরিবর্তন হয়েছিল? তারা যিরুশালেমে এই আত্মবিশ্বাসের সাথে ফিরে আসে যে যিশু মৃতদের মধ্যে থেকে পুনরুত্থিত হয়েছেন। সেই থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষের মতো, পুনরুত্থানের মাধ্যমে তাদের জীবন চিরতরে পরিবর্তিত হয়েছিল।
একই অংশ বা পুস্তকটি একাধিকবার পড়ুন
জি. ক্যাম্পবেল মর্গ্যান (G. Campbell Morgan) ছিলেন বিংশ শতাব্দীর একজন অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রচারক। মর্গ্যান কখনো বাইবেল কলেজে যাননি, কিন্তু তিনি একজন সক্রিয় বাইবেল শিক্ষক হয়ে উঠেছিলেন। একটি পাঠ্যের উপর প্রচার করার আগে, মর্গ্যান অন্তত ৪০ বার বাইবেলের সেই গোটা পুস্তকটি পড়তেন যেটিতে তার নির্বাচিত পাঠ্যটি থাকত। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মর্গ্যান বুঝতে পেরেছিলেন কীভাবে সমগ্র পুস্তকে প্রতিটি পদ সাজানো আছে। তিনি পুস্তকটির গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি জানতেন; তিনি লেখকের বার্তাটি বুঝতেন। মর্গ্যান একবার বলেছিলেন, “বাইবেল কখনোই অলসতার কাছে আত্মসমর্পণ করে না।” বাইবেল অধ্যয়ন একটি কঠিন পরিশ্রম।
আপনি প্রশ্ন করতে পারেন, “আমি কীভাবে বাইবেলের একটি বই ৪০ বার পড়তে পারি? আমি তো কখনোই বাইবেল শেষ করতে পারব না।” আপনি যেমন ভাবছেন এটা ততটা কঠিন নয়। বেশিরভাগ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ প্রত্যেক মিনিটে ২০০টি শব্দ পড়তে পারে; তারা এক ঘণ্টায় ১২,০০০ শব্দ পড়তে পারে। বাইবেলের ৪৪টি বইতে ১২,০০০-এর চেয়ে কম শব্দ আছে। এটিতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে পৌলের চিঠিসমূহ, সাধারণ চিঠিপত্র, গৌণ ভাববাদীগণ, এবং পুরাতন নিয়মের কিছু বই যেমন রূত, এষ্রা, নহিমিয়, ইষ্টের, এবং দানিয়েল। প্রত্যেক দিন এক ঘণ্টায়, আপনি ৪০ দিনে ৪০ বার ইফিষীয়, ফিলিপীয়, কলসীয়, এবং ১ ও ২ থিষলনীকীয় পড়ে ফেলতে পারেন।
একটি সমগ্র পুস্তক পড়লে দেখা যায় যে পুস্তকটি কীভাবে সাজানো হয়েছে। এর আগে আমরা প্রেরিত ১:৮ পড়েছি যেখানে শিষ্যদেরকে যিরুশালেম, যিহূদিয়া, শমরিয়া, এবং পৃথিবীর প্রান্ত পর্যন্ত সাক্ষী হিসেবে পাঠানো হয়েছিল। আপনি যখন বারবার প্রেরিত পড়বেন, আপনি দেখবেন যে এটি সমগ্র পুস্তকটির জন্য একটি প্যাটার্ন বা নকশা প্রদান করে। প্রেরিতদের প্রথম অংশে, তাড়না শিষ্যদেরকে যিরুশালেম থেকে যিহূদিয়ার বাকি অংশে নিয়ে গিয়েছিল; প্রেরিত ৮ অধ্যায়ে ফিলিপ শমরিয়াতে সুসমাচার নিয়ে গেছেন; প্রেরিতের শেষে পৌল রোমে প্রচার করছেন, যেখান থেকে সুসমাচার পরিচিত জগতের সমস্ত প্রান্তে ছড়িয়ে পড়বে।
বারবার পড়ার জন্য কিছু পরামর্শ
১। জোরে জোরে বাইবেল পড়ুন বা বাইবেল পড়া শুনুন। আজকের দিনে যারা লিখিত পৃষ্ঠার উপর নির্ভরশীল তারা সাধারণত ভুলে যান যে বেশিরভাগ প্রাচীন খ্রিষ্টবিশ্বাসীরা বাইবেল পড়া শুনত। ইফিষীয় মন্ডলী যখন পৌলের চিঠি পেয়েছিল, তারা প্রত্যেক সদস্যের জন্য তার অনুলিপি তৈরি করেনি! একজন লিডার অন্যান্য সদস্যদের জন্য চিঠিটি পড়েছিলেন। ইতিহাসের বেশিরভাগ সময় জুড়েই একাধিক ব্যক্তি পড়ার চেয়ে শোনার মাধ্যমেই ঈশ্বরের বাক্য গ্রহণ করেছিলেন। পৌলের চিঠিগুলি মন্ডলীগুলিতে পড়া হত; ভাববাদীরা তাদের বার্তাগুলি বলতেন। একটি চিঠি জোরে জোরে পড়ার মাধ্যমে বা শ্রুতিপুস্তক (অডিও বুক) শোনার মতো এটিকে পড়তে শুনলে, আপনি ঠিক সেইভাবেই ঈশ্বরের বাক্য শুনতে পারবেন যেভাবে শাস্ত্রে প্রথম শতকের মন্ডলী শুনত।[3]
২। বিভিন্ন অনুবাদ থেকে বাইবেল পড়ুন (যদি আপনার কাছে আপনার ভাষায় একের বেশি অনুবাদ উপলব্ধ থাকে)। কিছু কিছু অনুবাদ তাদের বক্তব্য প্রকাশে অনেক বেশি জটিল বা পরিভাষাভিত্তিক; আবার কিছু কিছু অনুবাদ তুলনামূলকভাবে সহজ শব্দ ব্যবহার করার চেষ্টা করেছে। একের বেশি অনুবাদ থেকে পড়ার ফলে আপনি বার্তাটির ক্ষেত্রে নতুন কোনো বোধ বা অন্তর্দৃষ্টি লাভ করতে পারেন। আপনি যদি একের বেশি ভাষা জানেন, তাহলে দ্বিতীয় ভাষায় শাস্ত্রটি পড়া সহায়ক হতে পারে।[4]
৩। প্রত্যেকবার পড়ার সময় আলাদা আলাদা বিষয়ের উপর দৃষ্টিপাত করুন। যেমন, প্রত্যেকবার একটি পৃথক দৃষ্টিকোণ থেকে ঘটনাটিকে বিবেচনা করার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি একটি সপ্তাহে প্রত্যেক দিন একবার করে আদিপুস্তক ৩ অধ্যায়টি পড়তে পারেন:
সোমবার: স্বর্গস্থ পিতার দৃষ্টিকোণ থেকে আদিপুস্তক ৩ অধ্যায়টি পড়ুন। সন্তানদের পাপ দেখে পিতার কী অনুভূতি হতে পারে?
মঙ্গলবার: অধ্যায়টির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদ কোনটি?
বুধবার: শয়তানের দৃষ্টিকোণ থেকে আদিপুস্তক ৩ অধ্যায়টি পড়ুন। কীভাবে সে ঈশ্বরের সাথে তাঁর সন্তানদের সম্পর্ক নষ্ট করার চেষ্টা করেছে?
বৃহস্পতিবার: ক্রুশের উপর যিশুর বলিদান বিবেচনা করার সময় আদিপুস্তক ৩ পড়ুন।
শুক্রবার: আদম এবং হবার দৃষ্টিকোণ থেকে আদিপুস্তক ৩ পড়ুন। ঈশ্বরের বিচার শুনে তাদের কী মনে হয়েছিল?
শনিবার: প্রথমবার বাইবেল পড়ছে এমন কারোর দৃষ্টিকোণ থেকে আদিপুস্তক ৩ অধ্যায়টি পড়ুন। বাকি বাইবেল বোঝার জন্য এই কাহিনীটি কতটা এবং কীভাবে গুরুত্বপূর্ণ?
আপনার এক বছরের মধ্যে বাইবেল পড়ার জন্য www.bible.com-এ বেশ কিছু প্ল্যান রয়েছে। আরেকটি পরিকল্পনা হল, জি. ক্যাম্পবেল মর্গ্যান-এর (G. Campbell Morgan) মডেল অনুযায়ী, এক মাসে একাধিকবার একটি বই পড়া। যেহেতু বাইবেলের ৪৪টি বই এক ঘন্টা বা তার কম সময়ে পড়ে ফেলা যায়, তাই আপনি প্রতিদিন এক ঘন্টায় এক মাসে ৩০ বার একটি বই পড়তে পারেন। এটিকে একটি শম্বুকগতি প্রক্রিয়ার মতো মনে হতেও পারে, তবে একটি বই বারবার পড়লে আপনি ঈশ্বরের বাক্য গভীরভাবে বুঝতে পারবেন। এইভাবে পড়লে আপনি ছ’বছরে ৩০ বার পুরো বাইবেল পড়তে পারেন।[5]
ব্যাকরণ অধ্যয়ন করুন
ঈশ্বর আমাদের সঙ্গে বিভিন্নভাবে কথা বলেন, বিশেষত লিখিত শব্দের মাধ্যমে। যদিও শাস্ত্র বোঝার জন্য আপনার ভাষাবিদ হওয়ার দরকার নেই, আপনি যত ভালোভাবে লিখিত ভাষা বুঝতে পারবেন, ততই ভালোভাবে আপনি ঈশ্বরের বাক্যের গভীর সত্যগুলি উপলব্ধি করতে পারবেন।
একটি উদাহরণ হিসেবে আমরা পৌলের অন্যতম সুপরিচিত একটি পদ অধ্যয়ন করব। “অতএব, ভাইবোনেরা, ঈশ্বরের বহুবিধ করুণার পরিপ্রেক্ষিতে, আমি তোমাদের কাছে মিনতি করছি, তোমরা তোমাদের শরীরকে জীবন্ত বলিরূপে, পবিত্র ও ঈশ্বরের গ্রহণযোগ্যরূপে উৎসর্গ করো—তাই হবে তোমাদের যুক্তিসংগত আরাধনা” (রোমীয় ১২:১)। একটি পাঠ্যের ব্যাকরণ পরীক্ষা করার জন্য, আমরা যেগুলি লক্ষ্য করব:
ক্রিয়াপদ
ক্রিয়াপদ কাজ করা বা সত্তাকে বোঝায়। রোমীয় ১২:১ পদে দু’টি কর্মবাচক ক্রিয়াপদ আছে
মিনতি করা মানে “আপিল করা” বা “অনুনয় করা”। আপনি কি পৌলের অনুরোধের জরুরী ভাবটি অনুভব করেন? এটি একটি সাধারণ পরামর্শ নয়; এটিতে একটি গভীর আবেগ আছে যেখানে পৌল তার পাঠকদেরকে নিজেদেরকে সম্পূর্ণরূপে ঈশ্বরের কাছে দেওয়ার জন্য কাকুতি-মিনতি করছেন।
উৎসর্গ (বা উপস্থাপন) করা হল একটি সক্রিয় ক্রিয়াপদ। এটির জন্য একটি অঙ্গীকার বা দায়বদ্ধতা প্রয়োজন। পৌল তার পাঠকদেরকে ঈশ্বরের কাছে তাদের শরীর উৎসর্গ করার জন্য, তাদের নিজেদেরকে প্রদান করার জন্য আহ্বান করেছেন।
বিশেষ্য
রোমীয় ১২:১ পদে আমাদের অধ্যয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিশেষ্যগুলি হল:
ভাইবোনেরা। পৌল বিশ্বাসীদেরকে লিখছেন। তিনি পাপীদের রূপান্তরের জন্য আহ্বান করছেন না; তিনি বিশ্বাসীদেরকে আরো গভীর পবিত্রতার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন।
শরীর। রোমীয় ১২ অধ্যায়ের বাকি অংশে দেখা যায় যে শরীর আমাদের সম্পূর্ণ সত্তাকে উপস্থাপন করছেন। আমরা এটিকে এইভাবে বলতে পারি, “তোমাদের সম্পূর্ণ সত্তাকে দিয়ে দাও।”
করুণা। পৌলের আহ্বান ঈশ্বরের করুণার উপর ভিত্তিশীল। এই পদের ঠিক আগে যে অনুচ্ছেদটি আসে, সেখানে পৌল বর্ণনা করেছেন ঈশ্বর যে করুণা প্রদর্শন করেন তা ইহুদি এবং অইহুদি উভয়ের জন্যই (রোমীয় ১১:৩২)।
বলি। মোশির বিধানের অধীনে, একজন উপাসককে একটি বলিদান হিসেবে একটি পশুকে আনতে হত। খ্রিষ্টের রাজত্বে, জীবন্ত বলিদান রূপে নিজেদেরকে সম্পূর্ণভাবে প্রদান করার জন্য আমাদেরকে আহ্বান করা হয়েছে।
পরিবর্দ্ধক বা ধরন নির্ণয়
বিশেষণ এবং ক্রিয়া-বিশেষণ হল বর্ণনামূলক শব্দ হল সেই শব্দ “যেগুলি তাদের পরিবর্ধন করা শব্দগুলির অর্থকে বিস্তারিত করে।”[6] রোমীয় ১২:১ পদে বলিদান শব্দটি একগুচ্ছ শব্দ দ্বারা পরিবর্ধিত করা হয়েছে।
আমাদের নৈবেদ্য হল জীবন্ত। আমরা আর মৃত প্রাণীর বলিদান দিই না; আমরা দৈনন্দিন সমর্পণে আমাদের জীবন প্রদান করি।
আমাদের বলিদান অবশ্যই পবিত্র হতে হবে। পুরাতন নিয়মের কোনো উপাসক বলিদানের জন্য খোঁড়া বা বিকৃত পশু আনতে পারত না; নতুন নিয়মের কোনো বিশ্বাসী বলিদানের জন্য একটি অপবিত্র, অবাধ্য জীবন দিতে পারে না।
কেবল একটি পরিপূর্ণ এবং স্বেচ্ছাকৃত বলিদানই ঈশ্বরের কাছে গ্রহণযোগ্য।
অব্যয়
অব্যয় শব্দগুলিতে রয়েছে মধ্যে, উপরে, মাধ্যমে, প্রতি, পর্যন্ত, দ্বারা ইত্যাদি। এই ছোটো ছোটো শব্দগুলি বড় বড় অর্থ বহন করে। রোমীয় ১২:১ পদে দু’টি গুরুত্বপূর্ণ অব্যয় শব্দ রয়েছে:
“ঈশ্বরের বহুবিধ করুণার পরিপ্রেক্ষিতে” আমাদেরকে পৌলের আবেদনের জন্য একটি ভিত্তি প্রদান দেয়। এটি শত্রুর কাছে একজন সৈনিকের আত্মসমর্পণ নয়; বরং, এটি হল একজন প্রেমময় পিতার ইচ্ছার কাছে একজন সন্তানের আনন্দময় আত্মসমর্পণ।
আমাদের বলিদান অবশ্যই “ঈশ্বরের গ্রহণযোগ্যরূপে” হওয়া উচিত। খ্রিষ্টবিশ্বাসীদের জন্য, ঈশ্বরের অনুমোদনই চূড়ান্ত পুরস্কার।
সংযোগকারী শব্দ
সংযোগকারী শব্দ এবং বা কিন্তু খুবই শক্তিশালী। একজন লেখক সংযোগকারী শব্দগুলিকে সিমেন্ট-বালি মিশ্রণের সাথে তুলনা করেছেন যা ইঁটগুলিকে একে অপরের সাথে আটকে রাখে।[7] প্রেরিত ১:৮ পদে আমরা দেখি যে কিন্তু শিষ্যদের ভুল বোঝাবুঝির দিকে নির্দেশ করেছে।
রোমীয় ১২:১ পদে অতএব পূর্ববর্তী অংশটিকে নির্দেশ করে। আপনি যদি সম্পূর্ণ রোমীয় পত্রটি পড়েন, আপনি দ্রুত দু’টি বড় ভাগ দেখতে পাবেন:
রোমীয় ১-১১ অধ্যায় ধর্মতত্ত্ব শেখায়: পাপের জন্য দণ্ডাজ্ঞা (condemnation), বিশ্বাসের দ্বারা ধার্মিকগণিত হওয়া (justification), বিশ্বাসীর পবিত্রীকরণ (sanctification), ঈশ্বরের তাঁর সন্তানদের জন্য চূড়ান্ত উদ্দেশ্য হিসেবে গৌরবান্বিতকরণ (glorification), এবং এই উদ্দেশ্য পূরণের জন্য ঈশ্বরের উপায় হিসেবে মনোনয়ন (election)।
রোমীয় ১২-১৬ অধ্যায় এই ধর্মতত্ত্বের ব্যবহারিক প্রয়োগগুলি দেখায়। যেহেতু ঈশ্বর আমাদেরকে ধার্মিক হিসেবে গণ্য করেছেন, এইভাবেই আমাদের জীবন যাপন করতে হয়। কারণ আমরা যা বিশ্বাস করি (রোমীয় ১-১১), এটি হল যা আমরা করি (রোমীয় ১২-১৬)। সংযোগকারী পদটি হল রোমীয় ১২:১।
পৌলের একাধিক পত্রে অতএব একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ মার্কার বা চিহ্নিতকারী। গালাতীয় বিশ্বাসীদের কেবল বিশ্বাস দ্বারা ধার্মিকতার মহান সত্য মনে করিয়ে দেওয়ার পর, পৌল তাদেরকে দৈনন্দিন জীবন যাপনে ধার্মিকতার অনুশীলন করার আহ্বান করেছেন; “স্বাধীনতা ভোগ করার জন্যই খ্রীষ্ট আমাদের স্বাধীন করেছেন। অতএব, তোমরা অবিচল থাকো” (গালাতীয় ৫:১)। ইফিষীয়দের খ্রিষ্ট যিশুতে তাদের মনোনয়নের মহান তত্ত্বটি শেখানোর পর, পৌল তাদেরকে সেই আহ্বানের যোগ্য জীবনযাপন করার আহ্বান জানিয়েছেন; “অতএব, প্রভুতে বন্দি আমি তোমাদের কাছে মিনতি করছি, যে আহ্বান তোমরা লাভ করেছ, তার যোগ্য হয়ে জীবনযাপন করো” (ইফিষীয় ৪:১)। পৌল কলসীয়দের বলেছিলেন যে তারা মৃত এবং তাদের জীবন ঈশ্বরের মধ্যে খ্রিষ্টের সাথে লুকিয়ে রাখা হয়েছে। ফলস্বরূপ তাদের কীভাবে জীবন যাপন করা উচিত? “তাই তোমাদের সমস্ত পার্থিব প্রবৃত্তিকে নাশ করো” (কলসীয় ৩:৫)।
পাঠ্যের বিশেষ বিশদগুলি দেখুন[8]
পাঠ্যটিতে গুরুত্বপূর্ণ ধারণাগুলি চিহ্নিত করার জন্য বাইবেলের লেখকরা যে কৌশলগুলি ব্যবহার করেন তা চিনতে পারা আপনার অধ্যয়নে নতুন অন্তর্দৃষ্টি আনতে পারে। যে বিশদগুলি লক্ষ্য করবেন:
পুনরাবৃত্ত শব্দ
যখন একজন লেখক একটি শব্দকে ঘন ঘন পুনরাবৃত্ত করেন, তখন এটি কোনো গুরুত্বপূর্ণ ধারণাকে নির্দেশ করে। পর্যবেক্ষণের পর্যায়ে, আপনি পুনরাবৃত্ত শব্দটির সবকটি গভীর অর্থের দিকে লক্ষ্য দিতে নাও পারেন, কিন্তু আপনি শব্দটি চিহ্নিত করবেন এবং প্রশ্ন করবেন, “কেন এই শব্দটি পুনরাবৃত্ত করা হয়েছে?”
► নিম্নলিখিত শাস্ত্রাংশগুলি পড়ুন এবং পুনরাবৃত্ত শব্দগুলি চিহ্নিত করুন:
২ করিন্থীয় ১:৩-৭। এই অংশে সান্ত্বনা শব্দটি কতবার পুনরাবৃত্ত হয়েছে? এই অংশে পুনরাবৃত্তিটি লক্ষ্য করার সময়ে যে যে প্রশ্নগুলি আপনি করতে পারেন তার কিছু উদাহরণ:
প্রত্যেকবার কি একইভাবে সান্ত্বনা কথাটি ব্যবহৃত হয়েছে? (কখনো এটি একটি বিশেষ্য; কখনো একটি ক্রিয়াপদ।)
কোন কোন পরিবর্দ্ধক শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে? (সকল সান্ত্বনা; আমাদের সান্ত্বনা; তোমাদের সান্ত্বনা।)
যোহন ১৫:১-১০। এই অংশে থাকে বা থাকো [বাস করা অর্থে] কথাটি পুনরাবৃত্ত হয়েছে? এই অংশে পুনরাবৃত্তিটি লক্ষ্য করার সময়ে যে যে প্রশ্নগুলি আপনি করতে পারেন তার কিছু উদাহরণ:
তাঁর মধ্যে থাকার শর্তগুলি কী কী?
এই অংশটি সতর্কতাগুলি কি প্রকাশ করে যে তাঁর মধ্যে না থাকা সম্ভব?
তাঁর মধ্যে বাস করতে ব্যর্থ হওয়ার ফলাফলগুলি কী?
তাঁর মধ্যে থাকার আশীর্বাদগুলি কী কী?
বৈসাদৃশ্য
বহু বাইবেল লেখক মানুষ বা ধারণার মধ্যে বৈসাদৃশ্য তুলে ধরেন। যখন আপনি কোনো পদের মাঝখানে কিন্তু শব্দটি দেখেন, মনে রাখবেন এটি দু’টি বিপরীতার্থক ধারণাকে সংযুক্ত করতে পারে। বহু হিতোপদেশই এই ধরণের বৈপরীত্য ব্যবহার করেছে।
একজন সমালোচকের কথার উত্তর দেওয়ার দু’টি উপায় আছে: “বিনীত উত্তর ক্রোধ প্রশমিত করে, কিন্তু রূঢ় কথাবার্তা ক্রোধ জাগিয়ে তোলে” (হিতোপদেশ ১৫:১)।
একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার দু’টি উপায় আছে: “নেতৃত্বের অভাবে জাতির পতন হয়, কিন্তু উপদেশকদের সংখ্যা বেশি হলে জয় সুনিশ্চিত হয়” (হিতোপদেশ ১১:১৪)।
দরিদ্রদের প্রতি আমাদের আচরণ ঈশ্বরের প্রতি আমাদের মনোভাবকে প্রকাশ করে: “যে দরিদ্রদের শোষণ করে সে তাদের সৃষ্টিকর্তাকে অপমান করে, কিন্তু যে দরিদ্রদের প্রতি দয়া দেখায় সে ঈশ্বরকে সম্মানিত করে” (হিতোপদেশ 14:31)।
নতুন নিয়মের লেখকরাও বৈসাদৃশ্য ব্যবহার করেছেন। পৌল আমাদের পুরনো জীবন (অন্ধকার) এবং আমাদের নতুন জীবনকে (আলো) বিপরীত হিসেবে দেখিয়েছেন; “এক সময়ে তোমরা ছিলে অন্ধকার, কিন্তু এখন তোমরা প্রভুতে আলো …” (ইফিষীয় ৫:৮)।
১ যোহন ১:৫-৭ পদে যোহন অন্ধকার এবং আলোকে দু’ভাবে বিপরীত হিসেবে দেখিয়েছেন:
ঈশ্বর হলেন আলো এবং তাঁর মধ্যে কোনো অন্ধকার নেই।
আমরা যদি ঈশ্বরের সাথে সহভাগিতায় থাকি, তাহলে আমরা আলোয় চলব, অন্ধকারে নয়।
তুলনা
বৈসাদৃশ্য পার্থক্য দেখায়; তুলনা সাদৃশ্য দেখায়।
“দাঁতের পক্ষে সিরকা ও চোখের পক্ষে ধোঁয়া যেমন, অলসরাও তাদের যারা পাঠায় তাদের পক্ষে ঠিক তেমনই” (হিতোপদেশ ১০:২৬)।
“দূরবর্তী দেশ থেকে আসা সুসংবাদ সেই ঠান্ডা জলের মতো, যা পরিশ্রান্ত মানুষকে দেওয়া হয়েছে” (হিতোপদেশ ২৫:২৫)।
► যাকোব ৩:৩-৬ পড়ুন। জিভকে কোন তিনটি জিনিসের সাথে তুলনা করা হয়েছে? এই তুলনাগুলি থেকে আপনি কী শিখতে পারেন?
► হিতোপদেশ ২৬:৭-১১-র প্রতিটি পদেই মতো শব্দটি রয়েছে। প্রতিটি পদের জন্য তুলনাগুলি অধ্যয়ন করুন। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনি হিতোপদেশ ২৬:৭ পদের দিকে দেখেন আপনি নিজেকে বলুন: “মূর্খের মুখের হিতোপদেশ খঞ্জের অনুপযোগী পায়ের মতো হয় কারণ....” আপনি একজন মূর্খের বলা হিতোপদেশ এবং একজন খোঁড়া মানুষের পায়ের মধ্যে কোন মিল বা সাদৃশ্যগুলি দেখলেন?
তালিকা
আপনি যখন বাইবেল পড়েন, আপনার তখন তালিকাগুলি লক্ষ্য করুন এবং গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যের জন্য সেগুলি অধ্যয়ন করুন।
► পাঠটিতে এগিয়ে যাওয়ার আগে, নিচের তালিকাগুলি পড়ার জন্য কিছুটা সময় নিন:
১ করিন্থীয় ৩:৬ পদে পৌল করিন্থে তাঁ পরিচর্যা কাজের উপাদানগুলি দেখিয়েছেন।
১ যোহন ২:১৬ পদে এমন কিছু জিনিসের তালিকা করে যেগুলি পিতার পরিবর্তে জগত থেকে আসে।
গালাতীয় ৫:১৯-২১ পাপময় প্রকৃতির কাজগুলির তালিকা করে।
গালাতীয় ৫:২২-২৩ আত্মার ফলগুলির তালিকা করে।
উদ্দেশ্যমূলক বিবৃতিসমূহ
যে, যাতে, যেন ইত্যাদি শব্দগুলি সাধারণত একটি কাজের প্রেরণাকে বা কাজের ফলাফলকে বর্ণনা করে। উদ্দেশ্য এবং ফলাফলের মধ্যবর্তী সম্পর্কটি বিবেচনা করার জন্য কিছুটা সময় নিন; প্রশ্ন করুন কেন শাস্ত্র নির্দেশনা দিচ্ছে।
“তোমরা আমাকে মনোনীত করোনি, আমিই তোমাদের মনোনীত,” (কেন?) “ফলধারণ করবার জন্য নিযুক্ত করেছি—সেই ফল যেন স্থায়ী হয়—” (যোহন ১৫:১৬)।
“আমি তোমার বাক্য আমার হৃদয়ে লুকিয়ে রেখেছি ” (কেন?) “যেন আমি তোমার বিরুদ্ধে পাপ না করি।” (গীত ১১৯:১১)।
“কারণ জগৎ সৃষ্টির পূর্বেই তিনি আমাদের খ্রীষ্টে মনোনীত করেছিলেন” (কেন তিনি আমাদের বেছে নিয়েছিলেন?), “যেন তাঁর দৃষ্টিতে আমরা প্রেমে পবিত্র ও নিষ্কলঙ্ক হতে পারি” (ইফিষীয় ১:৪)।
অন্য সময়, বিবৃতিটি দেখাবে কীভাবে উদ্দেশ্যটি সম্পন্ন হয়:
“যুবক কেমন করে জীবনে চলার পথ বিশুদ্ধ রাখবে? তোমার বাক্য অনুযায়ী জীবনযাপন করেই রাখবে” (গীত ১১৯:৯)।
কীভাবে আমরা জীবন সম্পর্কে আশ্বস্ত থাকতে পারি? “পবিত্র আত্মার দ্বারা যদি শরীরের অপকর্মগুলি ধ্বংস করো, তোমরা জীবিত থাকবে” (রোমীয় ৮:১৩)।
শর্তসাপেক্ষ শব্দসমূহ
যদি দিয়ে শুরু হওয়া কোনো বাক্য সাধারণত একটি শর্ত প্রদান করে। কোনো কোনো সময়ে পাঠকরা আশা করে যে বাইবেলের প্রতিশ্রুতিগুলি কোনোরকম শর্ত পূরণ ছাড়াই পরিপূর্ণ হবে; কিন্তু, একটি শর্তসাপেক্ষ প্রতিজ্ঞা একটি নির্দিষ্ট শর্তের পরিপূর্ণতার উপর নির্ভরশীল। এটি সাধারণত একটি শর্তসাপেক্ষ শব্দের মাধ্যমে দেখা যায়।
শর্ত: “অতএব, কেউ যদি খ্রীষ্টে থাকে,”
ফলাফল: “সে এক নতুন সৃষ্টি; পুরোনো বিষয় সব অতীত হয়েছে, দেখো সব নতুন হয়ে উঠেছে” (২ করিন্থীয় ৫:১৭)।
শর্ত: “আমার নামে তোমরা যা কিছু চাইবে,”
ফলাফল: “আমি তা পূরণ করব” (যোহন ১৪:১৪)।
আপনি পড়ার সাথে প্রার্থনাও করুন
এই চূড়ান্ত নির্দেশটি অবশ্যই সুস্পষ্ট মনে হতে পারে, কিন্তু এটি গুরুত্বপূর্ণ। খ্রিষ্টবিশ্বাসীদের ক্ষেত্রে, বাইবেল অধ্যয়ন এবং প্রার্থনার জীবন কখনোই আলাদা হওয়া উচিত নয়। বাইবেল পড়া এবং প্রার্থনা করাকে আলাদা করার অর্থ হল ঈশ্বরের সাথে আমাদের দৈনন্দিন কথোপকথনের দু’টি দিককে ভাগ করা।
যাকোব আমাদের আশ্বস্ত করেন যে যখন আমাদের জ্ঞানের অভাব থাকে, তখন আমরা ঈশ্বরের সাহায্য চাইতে পারি; “তোমাদের কারও যদি প্রজ্ঞার অভাব থাকে, সে ঈশ্বরের কাছে তা চাইবে, যিনি কোনও ত্রুটি না ধরে উদারভাবে সকলকে দান করে থাকেন, আর তাকে তা দেওয়া হবে” (যাকোব ১:৫)। এটি একটি চমৎকার প্রতিশ্রুতি যখন আমাদের ঈশ্বরের বাক্য বোঝার জন্য ঈশ্বরের সাহায্যের প্রয়োজন হয়।
গীত ১১৯ অধ্যায় প্রার্থনা এবং শাস্ত্রের মধ্যে সংযোগটি দেখায়। গীতরচয়িতা বারবার ঈশ্বরকে বলেছেন যেন তিনি তাকে ঈশ্বরের বাক্য অধ্যয়নের জন্য নির্দেশনা দান করেন। একইভাবে, আমরাও আমাদের অধ্যয়নের সময় ঈশ্বরের সাহায্য চাইতে পারি।
“আমার চোখ খুলে দাও যেন আমি তোমার নিয়মকানুনের আশ্চর্য বিষয়াদি দেখতে পাই” (গীত ১১৯:১৮)।
“তোমার অনুশাসন আমাকে বুঝতে সাহায্য করো” (গীত ১১৯:২৭)।
“হে সদাপ্রভু, তোমার বিধি নির্দেশিত পথে চলতে আমাকে শিক্ষা দাও” (গীত ১১৯:৩৩)।
অনেকেই শাস্ত্রের বাক্যকে প্রার্থনায় পরিণত করার শক্তি শিখেছে। এই শাস্ত্রাংশগুলিকে ব্যক্তিগত প্রার্থনায় পরিণত করার চেষ্টা করুন:
গীত ২৩ – ঈশ্বরের নির্দেশনা এবং সুরক্ষা চাওয়ার জন্য একটি প্রার্থনা
যিশাইয় ৪০:২৮-৩১ – ঈশ্বরের শক্তির জন্য একটি প্রার্থনা
ফিলিপীয় ৪:৮-৯ – একটি ঈশ্বরীয় বা ধার্মিক মানসিকতার জন্য একটি প্রার্থনা
(১) একটি একক পদ অধ্যয়নের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণের প্রক্রিয়াটি শুরু করুন। পদটি থেকে যতগুলি সম্ভব প্রশ্ন করুন।
(২) আপনার পর্যবেক্ষণ ক্ষমতায় বাড়ানোর জন্য অন্তর্ভুক্ত ধাপসমূহ:
(১) যিহোশূয় ১:৮ পদের উপর পর্যবেক্ষণের তালিকা তৈরি করুন। একটি পরিষ্কার কাগজে পদটি লিখুন এবং তারপর প্রশ্ন করা শুরু করুন: “কে? কী? কখন? কোথায়? কেন? কীভাবে?” শেষ বিভাগে দেওয়া উদাহরণ এবং এই পাঠে দেওয়া নির্দেশিকাগুলি ব্যবহার করে যতগুলি সম্ভব পর্যবেক্ষণ লিখুন। এই পর্যায়ে আপনি পদটি ব্যাখ্যা করছেন না বা কোনো সারমনের আউটলাইন তৈরি করছেন না। আপনি কেবল পদটিতে বিশদগুলি লক্ষ্য করছেন।
(২) আরো অনুশীলনের জন্য মথি ২৮:১৮-২০ পদের ক্ষেত্রেও একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করুন।
SGC exists to equip rising Christian leaders around the world by providing free, high-quality theological resources. We gladly grant permission for you to print and distribute our courses under these simple guidelines:
All materials remain the copyrighted property of Shepherds Global Classroom. We simply ask that you honor the integrity of the content and mission.
Questions? Reach out to us anytime at info@shepherdsglobal.org
Total
$21.99By submitting your contact info, you agree to receive occasional email updates about this ministry.
Download audio files for offline listening
No audio files are available for this course yet.
Check back soon or visit our audio courses page.
Share this free course with others